আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইল্ড ভ্যালু ও তার গুরুত্ব
আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একটা টার্ম প্রচলিত আছে যেটাকে বলা হয় ইল্ড (Yield) ভ্যালু বা ইল্ড রেট। এটা দ্বারা বোঝানো হয় সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যতজনকে সিলেক্ট করা হয়েছে তার কতজন সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিট করে। অর্থাৎ অফার পাওয়ার পর ভর্তি হয়। এমাআইটি (ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি) এর ইল্ড ভ্যালু সবচেয়ে বেশি যা হলো ৮৫%। অর্থাৎ ১০০ জনকে অফার দেওয়া হলে তার ৮৫ জনই এমআইটিতে ভর্তি হয়। হার্ভার্ডে এই রেট ৮৩%।
ইল্ড ভ্যালু কি ম্যাটার করে?
কলেজ র্যাংকিং নির্ধারণের একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে ইল্ড রেট। আবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের প্রেস্টিজ ধরে রাখতে ও বেশি ফান্ড পেতেও ইল্ড রেট বেশি রাখতে চায়। এটা বেশি রাখার জন্য ইউনিভার্সিটিগুলো কম শিক্ষার্থী গ্রহণ করে এবং অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীকেই রিজেক্ট করে দেয়। দেখা যায় যাদের প্রোফাইল ভালো ও EFC (Expected Family Contribution) বেশি— তাদেরকেই অ্যাক্সেপ্ট করা হয়, যাতে অফার পেলে তারা সেখানে অবশ্যই ভর্তি হয়। এক্ষেত্রে কলেজ রচনা ও সাপ্লিমেন্টাল কলেজ Essay-কেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই দেখা যায় যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এক্সেপ্টেন্স রেট কম সেখানে ইল্ড ভ্যালুও বেশি, যা একে অপরের ব্যাস্তানুপাতিক। যেমন এমআইটিতে এক্সেপ্টেন্স রেট মাত্র ৩.৯৬% ও ইল্ড ভ্যালু ৮৫%! বেশিরভাগ আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয় ও টপ টিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোরই ইল্ড ভ্যালু বেশি হয়ে থাকে।
যেসব বিষয়ের ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইল্ড ভ্যালু নির্ভর করে তা হলোঃ
১। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান
২। প্রেস্টিজ ও সুনাম
৩। একাডেমিক প্রোগ্রাম
৪। ক্যাম্পাস ও স্টুডেন্ট লাইফ
৫। ফিনান্সিয়াল এইড প্যাকেজ। ইত্যাদি।
ইল্ড ভ্যালু গণনাঃ
= (এনরোল করা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা / এক্সেপ্টেড শিক্ষার্থীদের সংখ্যা) * ১০০%
ইল্ড ভ্যালু বেশি রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি করে?
১। আর্লি ডিসিশানঃ আর্লি ডিসিশানে কোনো এপ্লিক্যান্ট কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করলে সে যদি সেখানে সিলেক্টেড হয় ও পর্যাপ্ত ফিনান্সিয়াল এইড পাই তাহলে তাকে সেখানে কমিট করতেই হবে, অন্য কোথাও ভর্তি হতে পারবে না।
২। রেস্ট্রিকটিভ আর্লি একশানঃ এই ধরণের আবেদন প্রক্রিয়ার আবেদনকারী কেবল ওই বিশ্ববিদ্যালয়টিতেই আবেদন করতে পারবে, সেখান থেকে রেজাল্ট পাওয়ার পরেই কেবল অন্য কোথাও আবেদন করতে পারবে।
আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের কি ইন্ড ভ্যালু বিবেচনায় রাখা উচিত?
ইল্ড ভ্যালু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন ও ব্যক্তিগত সুনাম অর্জনের বিষয়। তাই একজন আবেদনকারীর এটা নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজনীয়তা নেই। তবে ইল্ড ভ্যালু ও কলেজের এক্সেপ্টেন্স রেট জানা থাকলে কলেজ লিস্ট বানাতে সুবিধা হতে পারে। যেমনঃ হাতে সময় কম থাকলে, প্রোফাইল তুলনামুলক খারাপ হলে ও EFC কম হলে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইল্ড ভ্যালু বেশি ও এক্সেপ্টেন্স কম সেখানে আবেদন না করাই শ্রেয়। তবে কেউ প্রোফাইল নিয়ে আশাবাদী থাকলে আবেদন করাই যায়! কারণ যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইল্ড বেশি সেগুলোর অনেকগুলো নিড ব্লাইন্ড ইউনিভার্সিটি, তাই EFC আবেদনে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
Reference:
- Understanding university yield Rates: What they are and Why they matter. (2023, May 26). Crimson Education. https://www.crimsoneducation.org/nz/blog/university-yield-rates/